আজ শনিবার ১৩ এপ্রিল। ভারতের ইতিহাসের ন্যক্কারজনক ঘটনা ‘জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড’-এর ঠিক ১০০ বছর। ইংরেজ সেনানায়ক ব্রিগেডিয়ার রেগিনাল্ড ডায়ারের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
সেদিন অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির সংলগ্ন জালিয়ানওয়ালাবাগে শিখদের নববর্ষ উৎসবে সমবেত হয়েছিলেন নানা ধর্মের অন্তত ২০ হাজার মানুষ। তখন শহরে চলছিল রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন। সেই আন্দোলন বন্ধ করতে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার জারি করেছিল ১৪৪ ধারা। কিন্তু সেই ধারা ভঙ্গ করেই নববর্ষ উৎসব পালনের জন্য সবাই উপস্থিত হয়েছিলেন জালিয়ানওয়ালাবাগের ঐতিহাসিক ময়দানে।
ময়দানের চারপাশ ছিল উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। তার প্রবেশদ্বারও ছিল সংকীর্ণ। ব্রিটিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডায়ারের কানে পৌঁছে গিয়েছিলো এই জমায়েতের কথা। জেনারেল ডায়ার তৎক্ষণাৎ সেখানে সশস্র একশ সেনা ও সাঁজোয়া যান নিয়ে হাজির হন জালিয়ানওয়ালাবাগের সেই সভায়। তার নির্দেশে মূল ফটক বন্ধ করে কোন রকম সতর্কতা ছাড়াই নিরীহ ও নিরস্ত্র জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে ইংরেজ বাহিনী। অতর্কিতে এই গুলিবর্ষণের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যায় সেখানকার উপস্থিত মানুষজন। একটানা ১০ মিনিট ধরে চলে গুলিবর্ষণ। ১৬৫০টি গুলি কেড়ে নেয় সহস্রাধিক মানুষের প্রাণ, আহত হয় তারও বেশি। এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া ‘নাইটহুড’ উপাধি ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
ব্রিটিশদের দ্বারা সংগঠিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে বরাবরই উদাসীন থেকেছে ব্রিটেন। একশো বছর এর প্রাক্কালে এই প্রথমবার কোন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে এই নিয়ে মুখ খুললেন। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এই ঘটনাকে “ব্রিটিশ-ভারতের ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণ্য ঘটনা” হিসাবে বর্ণনা করে গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ এবং সমবেদনা জানালেন।